DA, PA কী? কীভাবে ওয়েবসাইটের DA PA বাড়ানো যায়?

পাঠ্যসূচি
DA PA কী?
DA ও PA হচ্ছে Moz দ্বারা তৈরি একটি সার্চ ইঞ্জিন র্যাঙ্কিং স্কোর, যা বলে দেয় যে সার্চ ইঞ্জিন রেজাল্ট পেইজে একটি ওয়েবসাইট র্যাঙ্ক করার সম্ভাবনা কতটা।
একটি ওয়েবসাইটের DA ও PA স্কোর সর্বনিম্ন ১ এবং সর্বোচ্চ ১০০ এর মধ্যে হয়ে থাকে।
কোনো ওয়েবসাইটের এই স্কোর যত বেশি থাকবে, সেই ওয়েবসাইট সার্চ ইঞ্জিনে র্যাঙ্ক হওয়ার সম্ভাবনাও ততো বেশি থাকবে।
যদিও গুগল বা অন্য কোনো সার্চ ইঞ্জিন MOZ-এর এই রেটিং স্কোর অনুসরণ করে না, তবে এর দ্বারা যেকোনো ওয়েবসাইটের র্যাংকিং অনুমান করা যায়।
তাই এটিকে উপেক্ষা করা মোটেও ঠিক না। DA ও PA দ্বারা আপনার প্রতিযোগী ওয়েবসাইটগুলোর ক্ষমতা সম্পর্কে জানতে পারবেন। এবার চলুন DA ও PA এর পার্থক্যটা জেনে নেওয়া যাক।
ডোমেইন অথরিটি (DA) কী?
DA এর পূর্ণরূপ হচ্ছে Domain Authority (ডোমেইন অথরিটি)। ডোমেইন অথরিটি (DA) সমগ্র ডোমেইন বা সাবডোমেনের র্যাঙ্কিং ক্ষমতা পরিমাপ করে।
ডোমেইন অথরিটি একটি ওয়েবসাইটের অনেকগুলো বিষয়ের উপর ভিত্তি করে গণনা করা হয়। বিশেষ করে রুট ডোমেন ও লিঙ্কের মোট সংখ্যা, এই দুটির উপর নির্ভর করে ডোমেইন অথরিটি স্কোর নির্ধারিত হয়।
আর্থাৎ যে ওয়েবসাইটের ব্যাকলিংক যতো বেশি, ঐ ওয়েবসাইটের ডোমেইন অথরিটি স্কোরও ততো বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
তবে ডোমেইন অথরিটি সার্চ ইঞ্জিনে সার্চ র্যাঙ্কিং বাড়ানোর জন্য কোনো মেট্রিক নয় এবং এটি SERP-তে কোনো পার্থক্য করে না।
পেইজ অথরিটি (PA) কী?
PA এর পূর্ণরূপ হচ্ছে Page Authority (পেইজ অথরিটি)।
পেইজ অথরিটি (PA) হচ্ছে MOZ দ্বারা তৈরি একটি স্কোর যা পরিমাপ করে যে সার্চ ইঞ্জিন ফলাফল পৃষ্ঠায় একটি নির্দিষ্ট ওয়েবপেইজ কতটা ভালো র্যাঙ্ক করবে।
অর্থাৎ পেইজ অথরিটি শুধুমাত্র একটি পেইজের শক্তির বিচার করে, সব পেইজের নয়।
একটি ওয়েবসাইটে DA ও PA কতো হওয়া প্রয়োজন? ওয়েবসাইটের জন্য সেরা DA PA।
সাধারণত, যে ওয়েবসাইট গুগল এবং উইকিপিডিয়ার মতো উচ্চ অথরিটি সম্পন্ন ওয়েবসাইটের লিঙ্ক নিয়েছে এবং সেই ওয়েবসাইটের বয়স বাড়লে, র্যাঙ্ক হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে এবং এই জাতীয় ওয়েবসাইটের DA, PA বেড়ে যায়।
তবে যদি কোনো ওয়েবসাইট নতুন হয়ে থাকে তাহলে প্রাথমিকভাবে সেটির DA, PA ১ থেকে শুরু হবে।
কারণ এই ওয়েবসাইটটি সম্পূর্ণ নতুন এবং ইন্টারনেটে এখনো পরিচিতি পায়নি।
তবে ওয়েবসাইট যত পুরনো হবে ততই অথরিটি বাড়বে। তাই অনেক বছর ধরে চলতে থাকা একটি ওয়েবসাইটকে সবসময় একটি ভালো ডোমেইন অথরিটি তৈরি করা যায়।
তবে আপনি যদি একটি নতুন ওয়েবসাইটের DA, PA বাড়াতে চান তবে আপনাকে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে।
তাই আপনি যদি কোনো পুরানো ডোমেইনের সন্ধান পান তবে সেই ডোমেইনের DA, PA চেক করুন। যদি দেখেন ঐ ডোমেইনের DA ও PA অনেক বেশি তাহলে তা ক্রয় করুন।
ওয়েবসাইটের DA PA চেক করে কীভাবে?
০১. প্রথমে এই লিংকে প্রবেশ করুন। তাহলে নিচের চিত্রের মতো একটি ওয়েবপেইজ খুলে যাবে।

০২. এবার ফাকা ঘরে আপনার ওয়েবসাইটের লিংকটি বসিয়ে দিন।
০৩. “I’m not robot” লেখা অপশনে টিক মার্ক দিয়ে ‘Check‘ বাটনে ক্লিক করুন। তাহলে নিচের চিত্রের মতো ফলাফল দেখতে পাবেন।

সেখানে আপনার ওয়েবসাইটের DA, PA স্কোর ছাড়াও আরো প্রয়োজনীয় বিভিন্ন তথ্য পেয়ে যাবেন।
কীভাবে ওয়েবসাইটের DA, PA বাড়ানো যায়?
এখন আমরা আমাদের ব্লগ বা ওয়েবসাইটের DA, PA বাড়ানোর উপায় নিয়ে আলোচনা করব।
DA, PA বাড়ানোর উপায় জানার আগে আমাদের জানা উচিত কেন আমরা আমাদের ওয়েবসাইটের DA ও PA বাড়াব।
অর্থাৎ কোনো ওয়েবসাইটের DA, PA বেশি থাকলে তাতে লাভ কী! DA, PA বাড়ানোর ফলে আপনার ওয়েবসাইটের পরিচয় বাড়বে, সার্চ ইঞ্জিনে র্যাংক করবে এবং আপনি সর্বাধিক অর্গানিক ট্রাফিক পাবেন।
এর ফলে আপনার ওয়েবসাইটটি থেকে অর্থ উপার্জন বেড়ে যাবে। তাই নিচে দেওয়া পয়েন্টগুলো থেকে চলুন জেনে নেওয়া যাক কীভাবে ওয়েবসাইটের DA, PA বাড়ানো যায়।
০১. আপনার ওয়েবসাইটে ভালো মানের কন্টেন্ট প্রকাশ করুন।
সাইটের বিষয়বস্তু যত ভালো হবে আপনার ওয়েবসাইটের সুনাম তত বাড়বে। বলা হয় “কন্টেন্ট ইজ কিং”।
ভালো মানের কন্টেন্ট প্রকাশের মাধ্যমে সাইটের ট্রাফিক বাড়বে, যা আপনার ডোমেইন অথরিটির ক্ষেত্রেও বড় ভূমিকা রাখবে এবং Google আপনার ওয়েবসাইট আরো বেশি করে র্যাঙ্ক করবে।
০২. অন পেইজ এসইওতে মনোযোগ দিন।
অন পেইজ এসইও আপনার সাইটের DA, PA বাড়াতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। তাই আপনাকে এই বিষয়ে মনোযোগ দিতে হবে।
আপনার ব্লগ সাইট হলে পোস্টে h1, h2, h3, ট্যাগ দেন। অন পেজ এসইও আপনার ব্লগের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
আজকের দিনে এটি ছাড়া আপনি আপনার ব্লগে ট্রাফিক আনতে পারবেন না এবং ডোমেন অথরিটি বাড়াতে পারবেন না।
এজন্য আপনাকে অবশ্যই আপনার ব্লগে অন পেইজ এসইও করতে হবে।
০৩. হাই কোয়ালিটি ব্যাকলিংক তৈরি করবেন।
আপনার ওয়েবসাইটের অথরিটি বাড়ানোর জন্য আপনাকে High DA PA সম্পন্ন ওয়েবসাইট থেকে Do Follow ব্যাকলিংক তৈরি করতে হবে।
আর এর জন্য কমেন্ট ব্যাকলিংক, প্রোফাইল ব্যাকলিংক, ফোরাম পোস্ট, গেস্ট পোস্ট ইত্যাদি করতে হবে।
০৪. আপনার সাইট থেকে Bad Links সরান।
ওয়েবসাইট থেকে বেড লিংকগুলো অপসারণ করা আবশ্যক। কারণ এটি আমাদের সাইটের স্প্যাম স্কোরও বাড়িয়ে দিতে পারে।
এবং যে ওয়েবসাইটে বেড লিংক রয়েছে গুগল সেসব ওয়েবসাইট পছন্দ করে না।
আপনি যখন একটি ব্যাকলিংক তৈরি করেন, তখন কিছু অকেজো লিংক তৈরি হয়। যা আমাদের ওয়েবসাইট বা ব্লগ থেকে মুছে ফেলা উচিত।
০৫. আপনার সাইটকে মোবাইল ফ্রেন্ডলি করুন।
বর্তমান সময়ে, বেশিরভাগ লোক মোবাইল থেকে ইন্টারনেট ব্যবহার করে তাই আমাদের উচিত আমাদের ওয়েবসাইটের ইন্টারফেসটিকে মোবাইল ফ্রেন্ডলি রাখা।
আপনার ওয়েবসাইটে এমন থিম ব্যবহার করুন যা দ্রুত লোড হয় এবং এসইও অপ্টিমাইজ করা, মোবাইল বান্ধব।
সাইটে মোবাইল ফ্রেন্ডলি থিম যোগ করার মাধ্যমে সাইটের র্যাঙ্কিং বৃদ্ধি পায় এবং এটি একটি খুব বড় র্যাঙ্কিং ফ্যাক্টর হিসেবে বিবেচিত হয়।
আপনি আপনার সাইটে চাইলে Amp থিম ব্যবহার করতে পারেন।
০৬. সাইটে নিয়মিত কন্টেন্ট প্রকাশ করুন।
আপনি আপনার সাইটে নিয়মিত পোস্ট/কন্টেন্ট প্রকাশ করুন। আপনাকে আপনার ধারাবাহিকতার দিকেও নজর দিতে হবে। এতে আপনার সাইটের ডোমেইন অথরিটি বৃদ্ধি পাবে।