বিনা পুঁজিতে অনলাইন রিসেলার ব্যবসা করে টাকা আয় করুন। ফেসবুকে অনলাইন ব্যবসা ২০২৩।

পাঠ্যসূচি
বিনা পুঁজিতে অনলাইন রিসেলার ব্যবসা করে টাকা আয় করুন। (ডিজিটাল ব্যবসার আইডিয়া)
আপনি কি কোনো অনলাইনে ঘরে বসে ব্যবসা আইডিয়া জানতে চান? আপনি কি ঝুঁকি ছাড়া অনলাইন ব্যবসা করতে ইচ্ছুক?
কিংবা আপনি কি অল্প পুজিতে অনলাইন ব্যবসা করতে চান? তাহলে প্রযুক্তি প্রিয়’র আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য।
আজকে আমি আপনাদের মাঝে ট্রেন্ডিং একটি অনলাইন বিজনেস টিপস শেয়ার করতে চলেছি। নতুন বিজনেস এর আইডিয়াটি আপনার অনেক পছন্দ হবে আশা করি।
প্রিয় পাঠক, আপনি হয়তো রিসেলার বা অনলাইন রিসেলিং ব্যবসার নাম শুনেছেন। যে অনলাইন ব্যবসাটি আপনি আপনার ঘরে বসেই পরিচালনা করতে পারবেন।
আপনি আরও জেনে অবাক হবেন যে, এই অনলাইন ব্যবসাটি শুরু করতে কোনো টাকা-পয়সার প্রয়োজন নেই। একদম বিনা পুঁজিতেই আপনি শুরু করতে পারবেন।
রিসেলার কি? / রিসেলার মানে কি?
রিসেলার (Re-Seller) হলো একটি ইংরেজি শব্দ। ইংরেজি শব্দের Re অর্থ পুনরায়, আর Seller অর্থ হলো বিক্রেতা।
আপনি যদি উক্ত দুইটি শব্দ এক সাথে করেন তাহলে অর্থ হবে পুনরায় বিক্রেতা। অর্থাৎ কোনো ব্যক্তি যখন কোনো পণ্য পুনরায় বিক্রি করে তাকে বলা হয় রিসেলার। বিষয়টি আরও ভালোভাবে বুঝতে আর্টিকেলটি পড়া চালিয়ে যান।
রিসেলার ব্যবসা কী?
কোনো একটি পণ্য বা প্রডাক্ট কারও কাছ থেকে অল্প টাকায় কিনে সেই পণ্য বা প্রডাক্টটি আবার অন্য কারো কাছে কিছু টাকা বেশি দামে পুনরায় বিক্রি করাকে বলা হয় রিসেলার ব্যবসা।
আপনাকে আরেও সহজ করে বলতে গেলে মনে করুন, একটি খোলা বাজার থেকে আপনি কোনো পণ্য কিনলেন এখন সেই পণ্য আবার অন্য কোনো ব্যক্তির কাছে বেশি দামে বিক্রি করলেন। আর তখন সেই মাধ্যমকে বলা হয় রিসেলার ব্যবসা।
চলুন বিষয়টি একটি উদাহরণের মাধ্যমে ভালোভাবে জেনে নেওয়া যাক। ধরুন আমি একজন পাইকারি টি-শার্ট বিক্রেতা।
আমার কাছ থেকে আপনি যদি কোনো টি-শার্ট কিনেন তাহলে আমাকে দিতে হবে ২৫০ টাকা।
ধরুন আপনি আমার কাছ থেকে ২৫০ টাকা করে ৫ টি টি-শার্ট কিনে নিলেন। এরপর আপনি প্রতিটি টি-শার্ট ৩৫০ টাকা করে বিক্রি করা শুরু করলেন।
তাহলে প্রতিটি টি-শার্ট প্রতি আপনার মুনাফা ১০০ টাকা। এটাকে বলা হয় রিসেল ব্যবসা।
আর একই কাজটি যদি আপনি অনলাইনে করেন তাহলে সেটাকে বলা হবে অনলাইন রিসেল ব্যাবসা। প্রায় সব ধরনের প্রডাক্ট নিয়েই রিসেল করা যায়।
আপনার যদি অনলাইন স্টোর, বা ফেইসবুক পেইজ থেকে থাকে, তাহলে আপনি রিসেলার প্রোগ্রামে যুক্ত করে বিনা পুঁজিতে বিজনেস চালাতে পারেন।
অনলাইন রিসেলার প্রোগ্রামে যোগ দিয়ে আপনি তাদের স্টকে থাকা হাজার হাজার আইটেম নিজ শপে সেল করতে পারবেন।
এটি সম্পূর্ণ ফ্রি। অর্থাৎ আপনাকে কোনো স্টক কিনে নিতে হবে না। এমনকি কাস্টমারকে ডেলিভারি করার দায়িত্বও তাদের।
অনলাইন রিসেল বিজনেসের সুবিধাসমূহ-
● এটি একটি ঝুকি ছাড়া অনলাইন ব্যবসা।
● এই অনলাইন ব্যবসা বাড়িতে বসে করতে পারবেন। কি অবাক হচ্ছে যে, বাড়িতে বসে কি ব্যবসা করা যায়? হ্যাঁ করা যায়।
● পড়াশোনা বা অন্য কোনো কাজের পাশাপাশি করতে পারবেন।
● প্রবাসীরাও করতে পারবেন।
● পুঁজি ছাড়া ব্যবসা।
● এটি একটি মেয়েদের অনলাইন ব্যবসাও।
● কোনো দোকান বা ঘরের প্রয়োজন নেই।
● এই অনলাইন বিজনেস বা ব্যাবসাটি কম্পিউটার বা স্মার্টফোন দিয়েই করা যায়।
● এর জন্য আপনি নিজেই যথেষ্ট, বারতি লোকের প্রয়োজন নেই।
● পণ্য কিনে মজুদ রাখার প্রয়োজন নেই।
● প্রতি সপ্তাহেই পেমেন্ট পাবেন।
● কাস্টমারকে পণ্য ডেলিভারি দেওয়ার চিন্তা আপনার করার প্রয়োজন নেই।
● অনলাইন শপ খোলার নিয়ম খুবই সহজ। যেকেউ ফেসবুক পেইজ খুলেই তা শুরু করতে পারবেন।
● এটি একটি ফেসবুকে অনলাইন ব্যবসা, অর্থ খরচ করে ওয়েবসাইট তৈরির প্রয়োজন নেই। তবে আপনি যদি ওয়েবসাইট তৈরি করেন সেটা আপনার অনলাইন রিসেলার ব্যবসার পরিধি বাড়িয়ে দিব।
অনলাইন রিসেলিং বিজনেস করার ওয়েবসাইট।
অনলাইনে বেশ কিছু কোম্পানি বা ওয়েবসাইট আছে যারা রিসেলার প্লাটফর্ম হিসেবে বিনা পুঁজিতে রিসেলিং ব্যবসা করার সুযোগ সকলকে দিয়ে থাকে।
তবে এসব কোম্পানি বা ওয়েবসাইটের মাঝ থেকে আপনাকে ভালো কোনো রিসেলার প্লাটফর্ম বাছাই করে কাজ করতে হবে।
অন্যথায় আপনার কাস্টমার প্রতারিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আর কাস্টমার প্রতারিত হলে আপনার ব্যবসাও চলবে না। কারণ কাস্টমার আপনাকে চিনবে আপনার রিসেলার প্লাটফর্মকে নয়।
আমি আপনাকে পরামর্শ দিব চেকবক্স (Checkbox) ওয়েবসাইটের সাথে কাজ করার জন্য। কারণ অনলাইনে অনেকেই রিসেলিং করার জন্য আপনাকে পণ্যের ছবি ও পণ্যের বিস্তারিত দিবে কিন্তু অর্ডার আসলে প্রোডাক্টের সম্পূর্ণ টাকা এডভান্স নিয়ে ব্লক করে দেওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে।
নিরাপত্তার জন্য চেকবক্স রিসেলার প্লাটফর্মই সেরা। কারণ অন্যান্য গ্রুপগুলোর পণ্যের মান সব সময় ভালো হয় না, আবার টাকা পয়সা নিয়ে প্রায় সময়ই বিভিন্ন ঝামেলা করে।
কিন্তু, চেকবক্স এমন ফ্রি-কমার্স প্লাটফর্ম যেখানে কোনো ধরণের এডভান্স নেওয়া হয় না।
কারণ তারা নগদে বিশ্বাসী, বাকি বা এডভান্সে না। আমার পরিচিত অনেকেই চেকবক্স ফ্রি-কমার্স থেকে মোটামুটি বেশ ভালো টাকা আয় করছে।
Checkbox এর প্রোডাক্টগুলোতে কোনও রিটার্ন/রিপ্লেসমেন্ট পলিসি রয়েছে কি?
Checkbox এর প্রতিটি প্রোডাক্টে কমপক্ষে ৭ দিনের ফ্রি রিপ্লেসমেন্ট ওয়ারেন্টি রয়েছে। কিছু কিছু আইটেমে ৭ দিনের বেশিও ওয়ারেন্টি রয়েছে।
সেগুলো প্রোডাক্ট পেইজের “Reseller Instructions” বক্সে লিখে দেওয়া আছে। যদি ওয়ারেন্টির ব্যপারে ডেসক্রিপশানে কিছু লেখা না থাকে, তাহলে ধরে নেবেন ৭ দিনের ফ্রি রিপ্লেসমেন্ট ওয়ারেন্টি হবে।
ফ্রি রিপ্লেসমেন্ট ওয়ারেন্টি অর্থ হচ্ছে যে, প্রোডাক্টটি কাস্টমারের কাছে ডেলিভারি হবার পর ৭ দিনের মধ্যে যদি প্রোডাক্টে কোনো ডিফেক্ট বা, কমপ্লেইন ধরা পড়ে, তাহলে চেকবক্স সম্পূর্ণ ফ্রিতে প্রোডাক্টটির রিপ্লেসমেন্ট পাঠিয়ে দিব।
এর জন্য নতুন করে কোনো ডেলিভারি চার্জ করা হবে না। কাস্টমার নতুন প্রোডাক্ট রেখে আগের প্রোডাক্টটি ডেলিভারিম্যানকে রিটার্ন করে দেবেন।
তবে রিপ্লেসমেন্ট ক্লেইম করার জন্য অবশ্যই ডিফেক্টের ভিডিও এভিডেন্স কাস্টমারের থেকে নিয়ে চেকবক্সকে ইমেইল করতে হবে।
চেকবক্সের রিসেল পার্টনারদের প্রফিট কীভাবে এবং কতদিন পর পর পেমেন্ট করা হয়?
কাস্টমারের কাছে প্রোডাক্ট সফলভাবে ডেলিভারি সম্পন্ন হবার সাথে সাথেই আপনার অ্যাকাউন্টে আপনার প্রফিট জমা হয়ে যাবে, যা আপনি তাদের CheckBox.live ওয়েবসাইটে ড্যাশবোর্ডের “PAYMENT” মেন্যুতে যেয়ে দেখতে পাবেন
প্রফিট পেমেন্টগুলো সরাসরি আপনার বিকাশ অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করে দেয়া হবে (বিকাশ খরচসহ)।
প্রতি সপ্তাহে ১ বার (বৃহস্পতিবার) চেকবক্সের পেমেন্টগুলো সম্পন্ন করা হয়ে থাকে।
চেকবক্সের সাথে অনলাইন রিসেলিং বিজনেস কীভাবে শুরু করবেন?
০১. চেকবক্স ওয়েবসাইটে নিবন্ধন করুন।
০২. চেকবক্স ওয়েবসাইটে লগিন করলে আপনি তাদের স্টকে থাকা অসংখ্য পণ্য দাম ও পণ্যের বিবরণ সহ দেখতে পাবেন।
আপনার পছন্দ অনুযায়ী চেক বক্স রিসেলার প্লাটফর্ম থেকে পণ্যের ছবি ও বিবরণ ডাউনলোড করুন।
০৩. রিসেলার রেটের সাথে আপনার মুনাফা যোগ করে আপনার অনলাইন স্টোর, বা ফেইসবুক পেইজ, ফেসবুক গ্রুপে পোস্ট করুন।
ধরুন চেকবক্স ওয়েবসাইটে কোনো পণ্যের দাম দেওয়া আছে ৪৫০ টাকা। তাহলে আপনি আরও ১০০-১৫০ টাকা বাড়িয়ে সেই দামে বিক্রি করতে চাইবেন। তাহলে ৪৫০ টাকার অতিরিক্ত টাকাগুলো আপনার মুনাফা।
০৪. অর্ডার আসলে তা চেকবক্স ওয়েবসাইটে গিয়ে এন্ট্রি করুন।
০৫. আপনার হয়ে আপনার পেইজ বা অনলাইন ব্যবসার নাম ও লগো ব্যবহার করে ক্লায়েন্টের কাছে পণ্য পৌঁছে দিবে চেকবক্স।
এবং প্রতি সপ্তাহের বৃহস্পতিবার আপনার বিকাশ অ্যাকাউন্টে আপনার মুনাফাগুলো তারা সেন্ড করে দিবে।
চেকবক্স ওয়েবসাইটে কীভাবে নিবন্ধন করবেন?
ধাপ-০১: প্রথমে চেকবক্সের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন। চেকবক্সের ওয়েব ঠিকানা হচ্ছে www.checkbox.live।
ধাপ-০২: উপরে বাম পাশে তিনটি রেখাযুক্ত একটি মেনু আইকন দেখতে পাবেন তাতে ক্লিক করুন।
ধাপ-০৩: এবার Sign Up লেখা অপশনে প্রবেশ করুন।
ধাপ-০৪: আপনার পুরো নাম এবং ফোন নাম্বার দিয়ে Send OTP বাটনে ক্লিক করুন।
ধাপ-০৫: আপনার মোবাইল নাম্বারে ম্যাসেজের মাধ্যমে একটি কোড দেওয়া হবে। ভেরিফিকেশন সম্পন্ন করতে পরবর্তী পেইজে সেই কোডটি লিখে Confirm বাটনে ক্লিক করুন।
ধাপ-৬: এখন আপনার বিকাশ নাম্বার, দোকান বা ব্যবসার নাম, ফেসবুক পেইজ বা ওয়েবসাইটের লিংক এবং ইমেইল ঠিকানা লিখে দিয়ে Complete বাটনে ক্লিক করুন।
ধাপ-৭: সর্বশেষ ধাপে দুটি ঘরেই পাসওয়ার্ড লিখে Submit বাটনে ক্লিক করুন।
তাহলে আপনার নিবন্ধনটি সম্পন্ন হয়ে যাবে। পরবর্তীতে চেক বক্স ওয়েবসাইটে লগিন করতে ইমেইল ঠিকানা এবং পাসওয়ার্ডের প্রয়োজন পড়বে।
চেকবক্স রিসেলার প্লাটফর্ম সম্পর্কে আরও জানতে ও বুঝতে অনুসরণ করতে পারেন তাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজ Checkbox Freecommerce এবং যুক্ত হতে পারেন Checkbox Business Club ফেসবুক গ্রুপে। ধন্যবাদ।