অনলাইন শপিং: প্রতারণা কি না কীভাবে বুঝবেন?

অনলাইন কেনাকাটায় প্রতারণা হচ্ছেন কি না কীভাবে বুঝবেন?
বাংলাদেশে অনলাইনে পণ্য কেনাবেচা করছে অসংখ্য প্রতিষ্ঠান। সোশ্যাল মিডিয়া এবং ই-কমার্স ওয়েবসাইটের মাধ্যমে চলছে এসব বেচাকেনা।
এক্ষেত্রে প্রতারণার ঘটনাও ঘটছে অহরহ। কিন্তু কোন অনলাইন প্রতিষ্ঠানের পণ্য কিনলে প্রতারণার শিকার হতে পারে একজন গ্রাহক তা বুঝবেন কী করে?
আজকের এই আর্টিকেলে থাকছে সেরকমটি কয়েকটি টিপস। যা জেনে আপনি সচেতন হবেন।
অনলাইন শপিং: প্রতারণা কি না কীভাবে বুঝবেন?
০১. আসল ওয়েবসাইট চেনা।
প্রতারক চক্র অনেক সময় বিখ্যাত কিংবা প্রতিষ্ঠিত অনলাইন কোনো প্রতিষ্ঠানের হুবুহু প্রতিরূপ তৈরি করে। কখনো বানানের সামান্য পরিবর্তন এনে, কখনো আবার ডিজাইনে।
সুতরাং আপনার কাংখিত ওয়েবসাইটে ঢুকার আগে বানানের দিকে খেয়াল রাখুন। দেখুন আপনি সঠিক ওয়েবসাইটে ঢুকছেন কিনা।
এছাড়া ওয়েব এড্রেসে http এর সঙ্গে s না থাকলে, অর্থাৎ ওয়েব এড্রেসে https:// না হয়ে http:// হলে সেই ওয়েবসাইট ত্যাগ করুন।
০২. রিভিউ এবং ঠিকানা।
আপনি অনলাইনে যেখান থেকে পণ্য কিনুন না কেন কেনার আগে রিভিউ দেখে নেওয়া অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
অনেক সময় ফেইক রিভিউও থাকে। সুতরাং রিভিউ এর বেশিরভাগই নতুন এবং ভূয়া অ্যাকাউন্ট থেকে কিনা সেটা খেয়াল করুন।
চেষ্টা করুন অনেক বেশি সংখ্যক রিভিউ পড়ে উক্ত প্রতিষ্ঠানটির সেবা সম্পর্কে সঠিক ধারণা পেতে। এছাড়া প্রতিষ্ঠানটির বাস্তব কোনো ঠিকানা এবং ফোন নাম্বার আছে কিনা সেটা দেখে নিন।
০৩. অতিরিক্ত ছাড়, চটকদার বিজ্ঞাপন।
অনেক সময় অস্বাভাবিক মূল্য ছাড় বা ক্যাশব্যাক অফার কিংবা অস্বাভাবিক কম দামে পণ্য বিক্রির চটকদার বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়!
এই সুযোগ খুবই অল্প সময়ের জন্য, এমন ঘোষণা দিয়ে গ্রাহকদের দ্রুত অর্ডার করতে প্রলুব্ধ করা হয়। সুতরাং এসব ক্ষেত্রে হুটহাট অর্ডার করার আগে অবশ্যই আপনার সতর্ক হওয়া উচিত।
০৪. পেইজের বয়স।
ফেসবুকে অনলাইন কেনাকাটার ঘটনাগুলোতে উল্লেখযোগ্য ক্ষেত্রেই দেখা যায় সেই পেইজগুলো নতুন করে তৈরি করা।
সুতরাং আনকোরা কোনো পেইজ থেকে অর্ডার করার আগে সেটি সম্পর্কে খোজ খবর নিন। দেখুন পেইজটিতে পণ্য নিয়ে ফেসবুক লাইভ হয় কিনা।
পেইজটিতে যেসব পোস্ট বুস্ট করা হচ্ছে সেসব পোস্ট থেকে অন্যান্য পোস্টের রিয়াক্ট, কমেন্ট অস্বাভাবিক কম হলে সতর্ক হোন। পোস্টের মন্তব্যগুলো পড়ুন তারপর সিদ্ধান্ত নিন।
০৫. পণ্য যাচাই-বাছাই।
সব দেখে শুনে যদি কোনো পণ্য অর্ডার করতেই চান তাহলে যে পণ্যটি পছন্দ করেছেন সেটির বিবরণ বিস্তারিত আছে কিনা দেখে নিন।
পণ্যের মাপ, ওজন ইত্যাদি জানুন। প্রয়োজনে চ্যাটিং-এ আরো কিছু জানুন। সম্ভব হলে বিজ্ঞাপনে ব্যবহৃত ছবি ছাড়াও পণ্যের সত্যিকারের ছবি চাইতে পারেন।
০৬. রিটার্ন এবং রিফান্ড পলিসি।
সব শেষে প্রতিষ্ঠানটির রিটার্ন এবং রিফান্ড পলিসি আছে কিনা, থাকলে সেটা কেমন, গ্রাহক বান্ধব কিনা, সেটা যাচাই করুন।
০৭. অগ্রিম পেমেন্ট।
অনলাইন কেনাকাটার প্রতারণার একটি বড় হাতিয়ার হচ্ছে গ্রাহকদের কাছ থেকে অগ্রিম পেমেন্ট নেওয়া।
সুতরাং প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠান না হলে কিংবা প্রতিষ্ঠান থেকে সন্তুষ্ট জনক স্পষ্ট ধারণা না পেলে অগ্রিম পেমেন্ট না করাই ভালো।
সবচেয়ে ভালো হয় আপনি যদি সব কিছু যাচাই-বাছাই এর পাশাপাশি আপনি যদি ক্যাশ অন ডেলিভারিতে করেন এবং পণ্য হাতে পেয়ে দেখেশুনে অর্থ পরিশোধ করেন।
এছাড়া অনলাইনে বা ফেসবুকে লোভনীয় অফারের কোনো পপআপ, ইমেইলে বা ম্যাসেজে পাওয়া কোনো অপরিচিত লিংকে ক্লিক করা কিংবা পাবলিক ওয়াইফাই ব্যবহার করে অনলাইনে কেনাকাটা না করাই ভালো।
সব মিলিয়ে কেনার আগে আপনি যত বেশি যাচাই-বাছাই করবেন, যত বেশি সন্দেহপ্রবণ এবং সতর্ক থাকবেন ততই কমে যাবে আপনার প্রতারিত হওয়ার সম্ভাবনা।
উৎস: BBC News বাংলা।